অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় কারা?

Daily Inqilab এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুনশী

২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৬ এএম

আরবী ‘আল মাগদুব’ শব্দটির মূলধাতু হচ্ছে ‘গাদাবুন’। এর অর্থ হচ্ছে অভিশাপ, বদদোয়া, কোপগ্রস্ত ইত্যাদি। আরবী আল মাগদুব শব্দ দ্বারা ঐ সকল অভিশাপ, কোপগ্রস্ত ও বিভ্রান্তিতে পতিত মানব শ্রেণিকে বুঝায়, যারা সুপথ পরিহার করে কুপথে চলাকে বেছে নিয়েছে এবং যারা অভিশাপগ্রস্ত জাতি ও শ্রেণি হিসেবে পরিচিত হয়ে আছে। তারা হলো ইহুদি সম্প্রদায়। আল কুরআনের ১নং সূরা আল ফাতিহার ৭নং আয়াতে তাদের পরিচয় তুলে ধরে ইরশাদ হয়েছে: ‘তাদের পথে আমাদের পরিচালিত করুন, যাদের প্রতি আপনি নেয়ামত প্রদান করেছেন। (তারা হলেন, নবীগণ, সিদ্দিকগণ, শহীদগণ এবং পুণ্যবানগণ)। আর তাদের পথে নয়, যারা অভিশপ্ত, (এখানে অভিশপ্ত বলতে ইহুদিদের বুঝানো হয়েছে)।

ইহুদি শব্দটি আরবী হুদ শব্দ হতে গৃহীত, যার অর্থ তাওবাহ করা। অথবা শব্দটি ইয়াহুদা হতে গৃহীত। ইয়াহুদা ছিলেন হযরত ইউসুফ (আ.) এর ভাই বানি ইসরাইলের একজন সদস্য। সাধারণত সকল বানি ইসরাইলের ওপর শব্দটির প্রয়োগ হয়ে থাকে। ইহুদিগণ তাদের ধারণা মতে, হযরত মূসা (আ.) এর অনুসারী। তাওরাত তাদের আসমানী গ্রন্থ। হযরত মুসা (আ.) এর কালে তাদের বানি ইসরাইল বলা হতো। কোন সময় হতে তারা ইহুদি নামে আখ্যায়িত হলো এ সম্পর্কে নিশ্চিত রূপে কিছু বলা যায় না। ইহুদি ধর্ম মতে কিছু অদ্ভুত ও অভিনব বিশ্বাস লালন করা হয়। যেমন ইহুদিগণ আল্লাহপাকের সবচেয়ে বেশি পছন্দনীয় সৃষ্টি। ইহুদিগণ আল্লাহর পুত্র। এ পৃথিবীতে ইহুদি না থাকলে সকল বরকত কল্যাণ তুলে নেয়া হতো। সূর্য আচ্ছাদিত হয়ে পড়ত। বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ হয়ে যেত। তাদের ধারণায়, অইহুদির তুলনায় ইহুদিরা এতই উত্তম যেমন মানুষ উত্তম অন্যান্য প্রাণীর তুলনায়। ইহুদি নয় এমন ব্যক্তির সাথে ইহুদির বিনয়-ন¤্র আচরণ নিষিদ্ধ। বরং ইহুদি নয় এমন ব্যক্তির সাথে নদ্র-ভদ্র ব্যবহার করা সবচেয়ে ঘৃণ্য অপরাধ। পৃথিবীর সকল ধনভা-ার ইহুদিদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এটা তাদের অধিকার। সুতরাং যেভাবেই হোক পৃথিবীর সম্পদ হস্তগত করা তাদের জন্য বৈধ। আল্লাহতায়ালা শুধু ইহুদিদের উপাসনা কবুল করেন। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী নবীগণ নিষ্পাপ নন। বরং তারাও গোনাহের ফাঁদে আটকা পড়েন। তাদের ধারণায় দাজ্জাল হবে ন্যায়পরায়ণ শাসক। তার আগমনের পর সারাবিশ্বে তার ক্ষমতা ও রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। তারা হযরত ঈসা (আ.) ও হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর নাবুওয়াত স্বীকার করে না। হযরত মারইয়াম (আ.) এর ওপর মিথ্যা অপবাধ-আরোপ করে। হযরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে তাদের ধারণা হলো যে, তাঁকে শূলে চড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। আল কুরআনুম মাজিদের বিভিন্ন জায়গায় ইহুদিদের এসকল ভ্র্রান্ত আকিদা বিশ্বাস প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং তাদের অভিশপ্ত জাতি হিসেবে সোহরাকিত করা হয়েছে। হযরত উযায়ির (আ.) এর ব্যাপারে তাদের ধারণা হলো যে, তিনি আল্লাহর পুত্র। আল্লাহতায়ালা আসমান-জমীন সৃষ্টি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কাজেই সপ্তম দিন বিশ্রাম নিতে বাধ্য হন। এ জাতীয় হাজারো ভ্রান্ত আকিদা তাদের ধর্মের অঙ্গ। আহলে কিতাব নামধারী হলেও এ সকল মিথ্যা, বানোয়াট, আকিদা বিশ্বাসের কারণে তারা আদতে কাফির ও মুশরিক ছাড়া কিছুই নয়। [এর জন্য দেখুন (ক) আহকামুল কুরআন জিল কুরতুবী : ১/৪৩৩; (খ) আল কাসুল ফিল মিলাল ওয়ান আহওয়া ওয়ান নিহাল : ১/৪৯। (গ) আল আদঈয়ান ওয়াল ফিরাক : উদ্ধৃতি আল আকীদাতুল হানাফিয়্যাহ : ১৪০।)

আর আল কুরআনে পথভ্রষ্ট ও বিপথগামী বলতে ‘দ্বাল্লিন’ শব্দটির ব্যবহার ৮ বার লক্ষ করা যায়। যেমন (১) আল কুরআনের ১নং সূরা আল ফাতিহার ৭নং আয়াতে, (২) ২নং সূরা আল বাকারাহ-এর ১৯৭ নং আয়াতে, (৩) ৬ নং সূরা আল আনয়াম-এর ৭৭ নং আয়াতে, (৪) ২৩ নং সূরা মুমিন-এর ১০৬ নং আয়াতে, (৫) ২৬ নং সূরা শোয়ারা-এর ২০ নং আয়াতে, (৬) ২৬ নং সূরা শোয়ারা-এর ৮৬ নং আয়াতে, (৭) ৩৭ নং সূরা সাফফাত-এর ৬৬ নং আয়াতে এবং (৮) ৫৬ নং সূরা আল ওয়াকিয়াহ-এর ৯২ নং আয়াতে।

আরবী ‘দ্বালালাতুন’ শব্দ মূল হতে ‘দ্বাল্লিন’ শব্দটি গঠিত হয়েছে। দ্বালালাতুন-এর অর্থ হলো পথচ্যুত, বিপথগামী, সত্যপথ বিচ্যুত, গোমরাহী ইত্যাদি। যারা আল্লাহতায়ালার প্রদত্ত সত্য পথ পরিহার করে ভ্রান্ত পথে নিজেদেরকে আঁকড়ে ধরে আছে, তারাই ‘দ্বাল্লিন’ বলে অভিষিক্ত। এই ‘দ্বাল্লিন’দের পরিচয় হিসাবে আল কুরআনে নাসারা সম্প্রদায়কে চিহ্নিত করা হয়েছে।

হযরত ঈসা (আ.) এর বাসস্থান ছিল নাসরানা বা নাসিরা বা নাসুরিয়্যাহ নামক স্থানে। ঐ স্থানের দিকে সম্বন্ধ করে তথাকার লোকদের নাসারা বলা হয়। তারা নিজেদের হযরত ঈসা (আ.) এর অনুসারী বলে মনে করে। তাদেরকে ঈসায়ী বা মাসিহি বলা উচিত নয়। কেননা ঈসায়ী বা মাসিহি-এর অর্থ হল যারা ঈসা (আ.) এর ভক্ত বা অনুসারী। অথচ তারা বাস্তবে হযরত ঈসা (আ.) এর অনুসারী নয়। তারা হযরত ঈসা (আ.) এর শিক্ষা হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ও তাঁর মূল শিক্ষাকে বিকৃত করেছে। এ কারণেই আল কুরআন ও হাদীস শরীফে তাদেরকে ঈসায়ী নামে আহবান করা হয়নি। বরং নাসারা, আহলে কিতাব, আহলে ইঞ্জিল বলা হয়েছে। সম্ভবত খৃষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দির প্রথম দিকে তারা নাসারা উপাধিতে পরিচিত হয়েছে। এ সম্প্রদায়ের ধারণা ও দাবি হলো, তারা ঈসা (আ.) এর অনুসারী। ইঞ্জিল তাদের ঐশি গ্রন্থ। কিন্তু তাদের ভ্রান্ত ধর্মীয় বিশ্বাস কুফর ও শিরকের উপর প্রতিষ্ঠিত। যেমন, তারা তিন ইলাহতে বিশ্বাসী। অর্থাৎ তারা মনে করে উলুহিয়াত বা প্রভুত্বের তিনটি অংশ ও মূল উপাদান রয়েছে। যথা : (ক) স্বয়ং আল্লাহতায়ালা পিতা। (খ) হযরত ঈসা (আ.) পুত্র। (গ) রুহুল কুদুস হযরত জিব্রাঈল (আ.)। (ঘ) তারা মনে করে হযরত ঈসা (আ.)-কে শূলে লটকিয়ে হত্যা করা হয়েছে। (ঙ) তারা এ কথাও বলে, আদম (আ.) নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল খাওয়ার কারণে তার বংশধর ধ্বংস হওয়ার যোগ্য হয়ে পড়ে। আল্লাহতায়ালা তার বান্দাহদের প্রতি করুণা করে স্বীয় কালেমা ও চিরস্থায়ী পুত্র ঈসাকে বাহ্যিক আকৃতি দান করে জিব্রাঈলের মাধ্যমে হযরত মারইয়ামের গর্ভে প্রেরণ করেন। মারইয়াম উক্ত অনাদি কালেমাকে ধারণ করার পর তাকে জন্ম দেয়ায় তিনি ইলাহের মাতা হয়ে গেলেন। অতঃপর নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও ঈসা (আ.) শূলে চড়ে আত্মোৎসর্গ করলেন, যাতে তিনি আদমের গোনাহের প্রায়শ্চিত্ত হয়ে যান। নাসারাদের মধ্যে অনেক দল উপদল থাকা সত্ত্বেও তাদের মৌলিক ধ্যান ধারণায় সকলে একমত। যদিও শাখা-প্রশাখাগত মতভেদ আছে। নাসারাগণ আহলে কিতাব হলেও তিন উপাস্যের বিশ্বাস, ঈসা (আ.) এর ইলাহ হওয়ার ধারণা, রিসালাতে মোহাম্মাদীয়ার অস্বীকৃতি এবং অন্যান্য কুফুরী-শেরকি আকিদার কারণে তারা কাফির ও মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত। যারা তাদের অথবা ইহুদিদের সত্যধর্মধারী বলে বিশ্বাস করে অথবা তাদের জান্নাতী হওয়ার বা জাহান্নামী না হওয়ার আকিদা পোষণ করে তারাও কাফির এবং ইসলামী গ-ি হতে বহির্ভূত।

তাওরাত হযরত মুসা (আ.) এর উপর, ইঞ্জিল হযরত ঈসা (আ.) এর উপর, যাবুর হযরত দাউদ (আ.) এর উপর নাযিল হয়েছে। কিন্তু ওই সকল কিতাব যথেষ্ট পরিমাণ পরিবর্ধন, বিকৃতি সাধন ও হেরফের করা হয়েছে। তাওরাত, ইঞ্জিল নামে বর্তমানে যে কিতাব পাওয়া যায়, তা আসমানী কিতাব নয়। বরং এগুলো বিকৃত ও পরিবর্তিত। বর্তমানে তাওরাত ও ইঞ্জিলের যে অংশ কুরআন শরীফ ও সহীহ হাদীস শরীফের সাথে মিল রাখে, তা গ্রহণযোগ্য। অন্যথায় সেগুলো বাতিল ও প্রত্যাখ্যাত। [(ক) আল আদইয়াল ওয়াল ফিরাক : ৩০-৩১ উদ্ধৃতি; (খ) আল আকিদাতুল হানাফিয়্যা : ১৪১-১৪২); (গ) আল ফসল ফিল মিলাল : ১/৪৪-৬৪; ২৪১)।]

আমরা পূর্ববর্তী আলোচনায় সুস্পষ্টভাবে জানতে পেরেছি যে, সূরাতুল ফাতিহার ৭ নং আয়াতে অভিশপ্ত জাতি ও গোষ্ঠী বলতে ইহুদিদের বুঝানো হয়েছে এবং পথভ্রষ্ট জাতি-গোষ্ঠী বলতে খ্রিষ্টান ও নাসারাদের সাব্যস্ত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত প্রাপ্ত বান্দাহদের পরিচয়ও উক্ত আয়াতে প্রদান করা হয়েছে। উক্ত সূরার ৬নং আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে: ‘আমাদের সরল পথের হেদায়েত দান করুন।’

আরবী ভাষায় স্নেহ, করুণা, দয়া, অনুকম্পা ও কল্যাণ কামনাসহ কাউকে মঙ্গলময় ও সত্যপথ দেখিয়ে দেয়া ও মনজিলে মাকসুদে পৌঁছিয়ে দেয়াকেই হেদায়েত বলা হয়। হেদায়েত শব্দটি দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হয়। যথা: (১) ‘ইরা আতুত্ তারীফ’ অর্থাৎ পথ প্রদর্শন করা। (২) ‘ইছাল ইলাল মাতলুব’ অর্থাৎ লক্ষ্যস্থলে পৌঁছিয়ে দেয়া। যেখানে হেদায়েত শব্দের পরে দু’টি বিষয় থাকবে, ‘ইলা’ প্রত্যয় থাকবে না, সেখানে হেদায়েতের অর্থ হবে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছিয়ে দেয়া। আর যেখানে হেদায়েত শব্দের পরে ‘ইলা’ প্রত্যয় আসবে সেখানে হেদায়েতের অর্থ হবে পথ প্রদর্শন। যেমন, মহান আল্লাহতায়ালা নূর নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) কে সম্বোধন করে বলেছেন: ‘নিশ্চয়ই আপনি যাকে চাইবেন তাকে লক্ষ্যস্থলে-মনজিলে মাকসুদে পৌঁছিয়ে দিতে পারবেন না। বরং আল্লাহতায়ালাই লক্ষ্যস্থলে পৌঁছিয়ে দেন, যাকে তিনি ইচ্ছা করেন।’ (সূরা আল কাসাস : আয়াত ৫৬)। এ আয়াতে হেদায়েত শব্দের পর ‘ইলা’ প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়নি বলে এর অর্থ হয়েছে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছিয়ে দেয়া এবং তা করা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাধ্যায়ত্ত নয় বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু পথ প্রদর্শন করা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাধ্যায়ত্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এতদসম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে: হে নবী! আর আপনি অবশ্যই সরল, সঠিক, দৃঢ় সোজা পথ প্রদর্শন করেন।’ (সূরা আশ শোরা : আয়াত ৫২)। কিন্তু লক্ষ্যস্থলে পৌঁছিয়ে দেয়ার কাজ কেবলমাত্র আল্লাহ পাকের জন্যই নির্ধারিত। তাই, তিনি নিজেই ঘোষণা করেছেন: ‘আর অবশ্যই আমি তাদেরকে সরল-সোজা-সুদৃঢ় পথে পৌঁছিয়ে দিতাম’। সূরা আন নিসা : আয়াত ৬৮। বস্তুতঃ সূরা ফাতিহার আলোচ্য আয়াতে হেদায়েত শব্দের পর ‘ইলা’ প্রত্যয়টি ব্যবহৃত হয়নি, যার ফলে এর অর্থ দাঁড়ায় সোজা, সরল ও সুদৃঢ় পথে মনজিলে মাকসুদের দিকে চালনা করা। মোট কথা, যেখানে বান্দাহ আল্লাহতায়ালার নিকট প্রার্থনা ও মোনাজাত করে কেবলমাত্র এতটুকুই বলো যে, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের সরল, সোজা পথের সন্ধান দিন। বরং এই বলে প্রার্থনা করে যে, হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে সরল, সোজা ও সুদৃঢ় পথে চলবার তাওফিক দিয়ে মনজিলে মাকসুদে পৌঁছিয়ে দিন। কেননা, শুধু পথের সন্ধান পেলেই যে পথ পাওয়া হবে এবং তা অবলম্বন করে মনজিলে মাকসুদে পৌঁছা সম্ভবপর হবে, তা নিশ্চিত নয়। এ পর্যায়ে সূরা আল-ফাতিহার ৬নং আয়াত আমাদের সিরাতে মুস্তাকীমের হেদায়েত দান করুন কথার অর্থ ও মর্ম অনুধাবন করা একান্ত দরকার। আরবী সিরাত শব্দের অর্থ হচ্ছে, রাস্তা বা পথ। আর মুস্তাকীম শব্দের অর্থ হচ্ছে, সরল-সোজা। এ হিসেবে সিরাতে মুস্তাকীম হচ্ছে এমন পথ যা একেবারে সোজা, সরল, প্রশস্ত ও সুগম, যা পথিককে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে বা মনজিলে মাকসুদে পৌঁছিয়ে দেয়। সে পথ দিয়ে চললে লক্ষ্যস্থল অতি নিকটবর্তী হয়, মনজিলে মাকসুদে পৌঁছার জন্য যা একমাত্র ঋজু পথ। সে পথ ব্যতীত অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার আর কোনো পথই হতে পারে না। এ পথের সন্ধান দিয়ে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন: ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার ও তোমাদের প্রতিপালক। অতএব, একমাত্র তাঁরই বান্দাহ বা দাস হয়ে থাক। এটাই হচ্ছে সিরাতুম মুস্তাকীম ও সুদৃঢ়, সরল পথ। (সূরা মারইয়াম : আয়াত ৩৬)। মোটকথা, আল্লাহকে রব বা প্রতিপালক স্বীকার করে এবং কেবলমাত্র তাঁরই বান্দাহ হয়ে জীবনযাপন করলেই সিরাতুল মুস্তাকীম অনুসরণ করা হবে। আল কুরআনের অন্যত্র ইসলামের জরুরি বিধি বিধান বর্ণনা করার পর মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন: ‘এছাড়া আরও যত পথ রয়েছে, তার একটাতেও পা দিও না। কেননা, তা করলে সে পথগুলো তোমাদের আল্লাহর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাবে। আল্লাহপাক তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন এ উদ্দেশ্যে, যেন তোমরা ধ্বংসের পথ হতে আত্মরক্ষা করতে পার। (সূরা আন আম : আয়াত ১৫৩)। (চলবে)


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

শামসুজ্জামান কোন সাংবাদিককে কত টাকা দিয়েছেন সবকিছু স্বীকার করেছেন

শামসুজ্জামান কোন সাংবাদিককে কত টাকা দিয়েছেন সবকিছু স্বীকার করেছেন

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সমস্যা সমাধানের আহবান আইডিইবি কুমিল্লার নেতৃবৃন্দের

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সমস্যা সমাধানের আহবান আইডিইবি কুমিল্লার নেতৃবৃন্দের

শরণখোলায় বজ্রপাতে ২ শ্রমিক নিহত, আহত ৭

শরণখোলায় বজ্রপাতে ২ শ্রমিক নিহত, আহত ৭

সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে বর্তমান সরকার জনগণের কাঁধে চেপেছে : জি এম কাদের

সিন্দাবাদের দৈত্য হয়ে বর্তমান সরকার জনগণের কাঁধে চেপেছে : জি এম কাদের

গোলটেবিল বৈঠকে পোশাকখাত সংশ্লিষ্টদের অভিমত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকতে তিন চ্যালেঞ্জ

গোলটেবিল বৈঠকে পোশাকখাত সংশ্লিষ্টদের অভিমত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকতে তিন চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশকে অঙ্গরাজ্য বানিয়েছে ভারত: রাশেদ প্রধান

বাংলাদেশকে অঙ্গরাজ্য বানিয়েছে ভারত: রাশেদ প্রধান

ময়মনসিংহে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কীমের গুরুত্ব’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা

ময়মনসিংহে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কীমের গুরুত্ব’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা

রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে শত শত মানুষ

রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে শত শত মানুষ

নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র নিহত

নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র নিহত

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করাই বর্তমান কমিশনের মূল লক্ষ্য -খুলনায় নির্বাচন কমিশনার

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করাই বর্তমান কমিশনের মূল লক্ষ্য -খুলনায় নির্বাচন কমিশনার

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় ২শ’র বেশি লোকের প্রাণহানি : জাতিসংঘ

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় ২শ’র বেশি লোকের প্রাণহানি : জাতিসংঘ

রাসিক সাবেক কমিশনার সাইদুজ্জামান খানের মৃত্যু

রাসিক সাবেক কমিশনার সাইদুজ্জামান খানের মৃত্যু

পূর্ণাঙ্গ সড়ক আইন সংসদে পাশের কাছাকাছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পূর্ণাঙ্গ সড়ক আইন সংসদে পাশের কাছাকাছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

হিসাব ব্যবস্থায় সংস্কার প্রয়োজন : অর্থমন্ত্রী

হিসাব ব্যবস্থায় সংস্কার প্রয়োজন : অর্থমন্ত্রী

পুলিশি বাধা অতিক্রম করে শাহবাগ মোড় অবরোধ চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের

পুলিশি বাধা অতিক্রম করে শাহবাগ মোড় অবরোধ চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের

বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আইএসইউ উপাচার্যের শ্রদ্ধা

বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আইএসইউ উপাচার্যের শ্রদ্ধা

নরসিংদীতে যাত্রীবাহী বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ২

নরসিংদীতে যাত্রীবাহী বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ২

স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে যুগোপযোগী ও কর্মদক্ষ যুবসমাজের কোন বিকল্প নেই: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে যুগোপযোগী ও কর্মদক্ষ যুবসমাজের কোন বিকল্প নেই: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

মণিপাল হসপিটালসে একীভূত আমরি ও মেডিকা সিনার্জি হাসপাতাল

মণিপাল হসপিটালসে একীভূত আমরি ও মেডিকা সিনার্জি হাসপাতাল

নারী নির্যাতন মামলায় ব্যক্তিগত আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন অভিযোগকারী

নারী নির্যাতন মামলায় ব্যক্তিগত আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন অভিযোগকারী